Logo
Logo
×

অভিমত

বাংলাদেশে ইসরায়েল বিরোধী আন্দোলন আরো জোরদার করা উচিত

Icon

আহমেদ খিজির 

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩২ পিএম

বাংলাদেশে ইসরায়েল বিরোধী আন্দোলন আরো জোরদার করা উচিত

গাজাবাসীদের ওপর স্মরণকালের সব থেকে বেশি আক্রমণ এবং নৃশংস গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা ছয় মাসের বেশি সময় ধরে চলা আক্রমণে ৩৫ হাজারের বেশি গাজাবাসী নিহত হয়েছে। আর নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। তবে ফিলিস্তিনের ওপর দখলদার ইসরায়েলীদের হামলা নতুন কোনো ঘটনা নয়, গত ৭৫ বছর ধরে এই নির্মমতা চলছে। 

তবে, এবারের নির্মমতা এতোটাই মাত্রাছাড়া যে, পুরো দুনিয়া এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ফুঁসে উঠছে। পশ্চিমা মিডিয়া প্রতিবারই খোলাখুলিভাবে ইসরায়েলের পক্ষ নিতো এবং এর বিরুদ্ধে কথা বললেই এন্টিসেমেটিক (ইহুদিবিদ্বেষ) তকমা এঁটে দিতো। একই কাজ করতো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ নানা ধরনের প্রতিষ্ঠান। আর মার্কিন সরকার ও তাদের পশ্চিমা দোসররা বরাবরই ইসরায়েলের জন্য আর্থিক, সমরাস্ত্র এবং রাজনৈতিক সহযোগিতা প্রদান করে। এবারও সেই ধারা চলছে। 

কিন্তু, এসবে এবার পশ্চিমা তরুণদের থামানো যায়নি। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তাঁরা রাস্তায় নেমে এসেছে ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলছে উত্তাল বিক্ষোভ। পুলিশ প্রশাসন দিয়ে থামানো যাচ্ছে না। 

কিন্তু বিপরীত ব্যাপার ঘটছে মধ্যপ্রাচ্যের শাসকদের মধ্যে। মুসলিম দেশের দুর্নীতিবাজ শাসকেরা যথারীতি নানারকম লোভে মার্কিন তাঁবেদারি চালিয়ে যাচ্ছে। অনেকে জনগণের ভয়ে হয়তো প্রকাশ্যে কিছু করছে না, কিন্তু গোপনে ইসরায়েলের হয়ে কাজ করছে। দুনিয়ার অন্যতম বৃহৎ মুসলমান জনগোষ্ঠীর দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বরাবরই ফিলিস্তিনের পাশে আছে। এমনকি আশির দশকে এদেশ থেকে বহু মানুষ ফিলিস্তিনের অধিকার আদায়ে সরাসরি সশস্ত্র যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। কিন্তু, বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের সক্রিয়তা যেন কেবল সামাজিক মাধ্যমের আর আলোচনা সভাতেই। 

গত নির্বাচনের আগে মার্কিন হস্তক্ষেপের আশায় সরকারবিরোধী কিছু শক্তি ইসরায়েলের ব্যাপারে চুপ থাকার সিদ্ধান্ত নেয় যা ছিল একটি ন্যাক্কারজনক সিদ্ধান্ত। এ ধরনের নতজানু অবস্থান রাজনীতির জন্য ভালো কিছু না, বিশেষত ফিলিস্তিনের মতো একটা বিষয়ে। অন্যদিকে, মার্কিন বিরোধীতার নাম করে সরকারি দল কিছুটা আহা উঁহুঁ করলেও আদতে ভারতের ইশারায় তাঁদেরও তেমন হোলদোল নেই। 

এমনকি ইসলামিক দলগুলোও এই ব্যাপারে রাস্তায় নেই। এদের কেউ কেউ সরকারের তাঁবেদারিতে ব্যস্ত, বাকিরা নিষ্ক্রিয়। 
প্রশ্ন আসতে পারে, বাংলাদেশে তো এখন প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার। যেদেশের মানুষের ভোটের অধিকারই নেই, তাঁরা ফিলিস্তিনের অধিকার নিয়ে মাঠে নামবে কেন?

কারণ, এই লড়াই বাংলাদেশের গণতন্ত্রের লড়াইকে নৈতিক শক্তি দিবে। কারা কারা ফিলিস্তিনের মানুষের জন্য মাঠে নামবে তা দেখে শত্রুমিত্র চিনতে সুবিধা হবে। পৃথিবীর ইতিহাসে বহুবার দেখা গেছে যে, একবার নৈতিক শক্তিতে বলীয়ান হলে জনতার পক্ষে যে কোনো ন্যায্য দাবির আন্দোলনের একটা গতিবেগ তৈরি হয়। ইসরায়েলের মতো দানবদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে শিখলে বাকিসব অপশক্তিকে রুখে দেওয়ার আত্মবিশ্বাস ও ক্ষমতাও জন্মাবে। 

অনুসরণ করুন