Logo
Logo
×

সংবাদ

তাপপ্রবাহের মধ্যে স্কুল খোলায় অসন্তুষ্ট অভিভাবকেরা

Icon

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫৬ পিএম

তাপপ্রবাহের মধ্যে স্কুল খোলায় অসন্তুষ্ট অভিভাবকেরা

রাত দুইটায় বিদ্যুৎ আসার পরে ঘুমিয়েছি। ভোর ৫টায় উঠে ফজরের নামাজ পড়েছি। এরপর আর ভয়ে ঘুমাতে পারিনি। কখন আবার আটটা বেজে যায়। এতো সকালে স্কুল থাকায় পুরো দিনটাই শুরু হলো চোখে ঘুম নিয়ে। তীব্র গরমে স্কুল খোলায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও অনেক কম। তবুও স্কুলে এসেছি। সরকারের নির্দেশ বলে কথা। কথাগুলো বলছিলেন পিরোজপুরের একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। 

ক্ষোভের বিষয়টি স্পষ্ট না করলেও তার মনের ক্ষোভের বিষয়টি বোঝা গেলো। তার মতে আরেকটি সপ্তাহ পর স্কুল খুললেই ভালো হতো। শ্রেণি কক্ষে তীব্র গরম। ফ্যানে কাজ হয় না। বাচ্চাদের উপস্থিতিও অনেক কম। অনেক অভিভাবকই তাদের কাছে ক্ষোভের কথা বলেছেন বলে জানান ওই শিক্ষক। 

গত বেশ কিছুদিন ধরেই দেশে তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে। প্রায় সারাদেশেই একই ধরনের গরম অনুভূত হওয়ায় ঈদুল ফিতরের ছুটির মধ্যেই সকল ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি বর্ধিত করে সরকার। জারি করা হয় হিট অ্যালার্ট। তবে তাপপ্রবাহের সেই ধারা না কমতেই স্কুল খোলার নির্দেশ দেওয়ায় সারাদেশের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।  

অভিভাবকরা বলছেন, শিশুদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সরকার আরও অন্তত এক সপ্তাহ পরে স্কুল খুলতে পারতো। এই গরমে না হয় পড়ালেখা। না যায় স্বস্তিতে থাকা। এর ওপর লোডশেডিং থাকায় রাতে ঘুমও হচ্ছে না। বিশেষ করে গ্রাম এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চরম অসন্তোষ প্রকাশ করছে।
 
এদিকে রবিবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আরো ৭২ ঘণ্টা বা তিন দিন ধরে এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।

রবিবার সারাদেশের ন্যায় রাজধানীর স্কুলগুলোতেও সকাল ৮টা থেকে শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়েছে। সে কারণে রোদ ওঠার আগেই অভিভাবকেরা সন্তানকে পৌঁছে দিয়েছেন স্কুলের আঙিনায়। একইসঙ্গে গরমে সুস্থ থাকতে দিয়েছেন নানা উপদেশ। আবার তাপপ্রবাহে ক্লাসের বাইরে বের না হতে, মাঠে খেলাধুলা না করতে এমনকি বন্ধুদের সঙ্গে দৌড়াদৌড়ি না করার জন্যও সতর্ক করেছেন তারা।

এর আগে শনিবার (২৭ এপ্রিল) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানা হয়েছে, এক সপ্তাহ ছুটির পর রোববার (২৮ এপ্রিল) থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোও খুলছে। তবে ক্লাসের সময় কমিয়ে আনা হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্লাস হবে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৮ এপ্রিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চলমান থাকবে। এক পালায় (শিফটে) পরিচালিত বিদ্যালয়গুলো প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে। আর দুই পালায় বিদ্যালয়গুলোয় প্রথম পালা সকাল ৮টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা এবং দ্বিতীয় পালা সকাল পৌনে ১০টা থেকে থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলমান থাকবে।
তবে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রাক -প্রাথমিক শ্রেণির কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। আর তাপদাহ সহনীয় পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত অ্যাসেম্বলি (প্রাত্যহিক সমাবেশ) বন্ধ থাকবে। চলমান তাপপ্রবাহের কারণে কোমলমতি শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর লার্নিং সেন্টারগুলোর শ্রেণি কার্যক্রম চালুর বিষয়ে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। 

অনুসরণ করুন