ভারত কি এখন ঝি মেরে বউ শাসনের পথে হাঁটছে?

ভারত কি এখন ঝি মেরে বউ শাসনের পথে হাঁটছে?

বলা নাই কওয়া নাই হঠাৎ একটি রিপোর্ট বাংলাদেশের সর্ব মহলে বেশ বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। রীতিমতো চোখ কপালে উঠার মতো। রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার মুখপাত্র হিসাবে পরিচিত ‘ইকোনমিক টাইমস’ পত্রিকায়।

আসামে সংগ্রামরত উলফার সামরিক শাখার প্রধান পরেশ বড়ুয়া বাংলাদেশে আবাসন, শিপিং, বস্ত্র, বিদ্যুৎ ও স্বাস্থ্য সেবায় মিলিয়ন মিলিয়ন বিনিয়োগ করেছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের তিনটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠানে কত কত মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করছে তারও উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টটিতে। যেমন বসুন্ধরা রিয়েল স্টেটে ৭ মিলিয়ন, যমুনা হাউজিংয়ে ৪ মিলিয়ন ও ইস্টার্ন হাইজিংয়ে ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে।

রিপোর্টটিতে সোর্স হিসেবে বাংলাদেশের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তদন্তে উঠে আসা একটি ক্লাসিফাইড রিপোর্টের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। 

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশে ইন্ডিয়া আউট শ্লোগান এবং ভারতীয় পণ্য বর্জন যখন তীব্র হচ্ছে; তখন আমাদের তিনটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভারতীয় পত্রিকায় এ ধরনের রিপোর্ট প্রকাশ বাংলাদেশকে কী বার্তা দিচ্ছে? তারা কি বাংলাদেশ সরকাকে চাপে ফেলে আরো এমন কিছু আদায় করতে চাচ্ছে, যা বর্তমান ইন্ডিয়া আউট আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট?

দ্বিতীয় যে প্রশ্ন, সেটি হচ্ছে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা দেখভালের দায়িত্বে নিয়োজিত একটি গোয়েন্দা সংস্থার ক্লাসিফাইড একটি সংবেদনশীল রিপোর্ট কিভাবে একজন ভারতীয় সাংবাদিকের হাতে গেল? তাহলে ভারতীয়দের কাছে আমাদের রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা বলে কিছু নেই? নাকি আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে ওরা বসে আছে? অথবা এমন কোনো সমঝোতা আছে যার কারণে আমাদের সবকিছু ওদের দিতে হয়?

তৃতীয় প্রশ্ন, যে তিনটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের নাম রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলো তো সরকারের সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠ। তাহলে তাদের টার্গেট করা হলো কেন? অথচ এরাই তো ‘অলিগার্স’ অন্তর্ভুক্ত শিল্পগোষ্ঠী। তাহলে ভারত কি ‘ঝি মেরে বউ শাসনের’ পথ বেছে নিয়েছে। যদিও দুই দেশের স্বামী ও স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে কে স্বামী কে স্ত্রী তা আমরা জানি না। তবে বাংলাদেশ যদি স্ত্রী হয়ে থাকে; তাহলে ওই রিপোর্টে একটা অশনি সংকেত আছে।

বিশেষ করে বাংলাদেশে ইন্ডিয়া আউট শ্লোগান ও পণ্য বয়কট কর্মসূচীর পাশাপাশি বিপুল আর্থিক সহায়তা নিয়ে চীনের উপস্থিতিকে ভারত মেনে নিতে পারছে না। কারণ তাদের মূল মাথাব্যথার কারণ ‘শিলিগুড়ি উপত্যকা’। ভারত মনে করে, চীন যে কোনো সময় ওই উপত্যকা বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে। সেটা হলে গোটা উত্তর-পূর্ব ভারত মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা হয়ে যাবে। যে করণে ভারত ১৯৭১ সালের যুদ্ধে আমাদের সাহায্য করেছিল, তার মূল লক্ষ্য ছিল চীনের সঙ্গে আবার যুদ্ধ হলে বাংলাদেশকে ‘পশ্চাৎ ভূমি’ হিসাবে ব্যবহার করা। কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে ক্রমাগত চীনের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরতা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক থাকা স্বত্ত্বেও ভারতকে একটা টানাপোড়েনে ফেলে দিয়েছে। তাই এই প্রশ্ন অবধারিতভাবেই উঠছে- ভারত এখন কি ‘ঝি মেরে বউ শাসনের’ পথে হাঁটছে?

বাঙালি মুসলমানের বড় অর্জন বাংলাদেশ পরবর্তী

বাঙালি মুসলমানের বড় অর্জন বাংলাদেশ

কমেন্ট

6090 Dawson Blvd, Suite H, Norcross, GA, United States, Georgia [email protected]