ছাত্রদল কখনও ব্যর্থ হয়নি : নাছির

ছাত্রদল কখনও ব্যর্থ হয়নি : নাছির

নাছির উদ্দীন, ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের জন্ম ১৯৮৮ সালের ১ জানুয়ারি, নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচরে। তার বাবা সাহাবুদ্দীন ও মা আফরোজা বেগম। ২০০৪ সালে চরক্লার্ক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ২০০৬ সালে নোয়াখালী সরকারী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছেন নাছির। এরপর ২০০৭-২০০৮ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হন তিনি। এখন একই বিশ্ববিদ্যালয়ে জাপানি ভাষা স্টাডিজে স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে অধ্যায়নরত তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তির পরপরই ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িত হন তিনি। এর পর নানা পথ পেরিয়ে চলতি বছরের ১ মার্চ সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ১১টি রাজনৈতিক মামলা চলছে। গ্রেফতার হয়েছেন দুই বার। আর নতুন পদ পাওয়ার পর কতটি মামলায় জড়ানো হয়েছে তা তিনি এখনও জানেন না। সম্প্রতি বাংলা আউটলুকের সাথে কথা তিনি কথা বলেছেন চলমান রাজনীতি নিয়ে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বাংলা আউটলুকের ঢাকা প্রতিনিধি। 

 

বাংলা আউটলুক : ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়ালেন কীভাবে?

নাছির : স্কুল জীবনে ছাত্রদলের নানা কর্মকাণ্ড দেখেছি। কিন্তু রাজনীতিতে জড়ানোর কোনো সুযোগ ছিল না। একইভাবে কলেজে গিয়েও সুযোগ পাইনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পরপরই ছাত্রদলের রাজনীতিতে যুক্ত হই। আমি রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার শুরুর সময়টাতে এক-এগারো চলছিল। তখন বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে রিমান্ডের নামে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছিল তারেক রহমানকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে এসব অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলা, প্রতিবাদ করাকে নিজের দায়িত্ব মনে করেছি। আমি চাইলে ওই সময় অন্য ছাত্র সংগঠনও করতে পারতাম। নানা ধরনের সুবিধা নিতে পারতাম। কিন্তু বিএনপি, ছাত্রদল, জিয়া পরিবারের নীতি-আদর্শ আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে ছাত্রদল করতে।

বাংলা আউটলুক : এর পর তো ফিরে যেতে পারতেন অনেকের মতো?    

নাছির : না। এক-এগারোর পর অনেকেই অনেক দিকে চলে গেছে। ক্ষমতার সাথে গা ভাসিয়েছে। আমি  সেটা পারিনি। একবারের জন্য মনেও হয়নি, এই দীর্ঘ ১৫/১৬ বছরের পথচলায় আমি কোনো ভুল করেছি। আমার মনে হয়েছে, ১৯৭১ সালের আগে দেশে যে পরিস্থিতি ছিল- সে সময় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায়  মানুষ যুদ্ধ করেছে; এখনো সেই পরিস্থিতিই বিরাজমান। আমি যখন ছাত্রদলের রাজনীতিতে এসেছি সে সময়েও দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, মৌলিক অধিকারে ঘাটতি রয়েছে, এখনো আছে। সে কারণেই আমার কখনওই মনে হয়নি, আমি ভুল পথে আছি। আমরা সঠিক পথেই আছি। মানুষের সাথে মুক্তির জন্য লড়াই করে যাচ্ছি।

বাংলা আউটলুক : রাজনীতির পথে পরিবার কখনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি?       

নাছির : বাংলাদেশের অপরাপর পরিবার থেকে আমার পরিবার আলাদা কিছু নয়। সামাজিক একটা প্রেক্ষাপট রয়েছে। রাজনীতি নিয়ে নেতিবাচক ধারণাও রয়েছে। শুরুতে এই চ্যালেঞ্জ অন্য অনেকের মতো আমারও ছিল। বাবা-মা, ভাই-বোন সবার সাথেই কিঞ্চিত মনোমালিন্য হয়েছে রাজনীতি নিয়ে। কিন্তু একটা সময়ে গিয়ে পরিবার আমার মতামতকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। আমার রাজনীতির নীতি-আদর্শকে শ্রদ্ধা করেছে, সহযোগিতা করেছে। এখনো করছে।

বাংলা আউটলুক : বিরোধী রাজনীতিতে জড়িয়ে মামলা-হামলায় শঙ্কিত?

নাছির : যখন থেকে ছাত্রদলের সাথে যুক্ত হয়েছি, তখন থেকেই মামলা-হামলা, জেল-জুলুমের মধ্য দিয়েই যাচ্ছি। বিএনপিকে কখনো ক্ষমতাসীন অবস্থায় পাইনি। ছাত্রদলের কর্মী থেকে শুরু করে এই সংগঠনের পর্যায়ে এসেছি। একই ধারায় চলছি। আমাদের সংগঠনের এমন কোনো নেতা-কর্মী নেই, যার বিরুদ্ধে মামলা নেই। সুতরাং আমরা যে সংগ্রাম করছি, তা সফল করতে গিয়ে জেল, জুলম, গুম, খুন এগুলো মোকাবেলা করতে হবে। পঙ্গুত্ব বরণ করতে হতে পারে। এগুলো আমরা মেনে নিয়েছি। এগুলো এখন আর আমরা ভয় পাই না। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা আমাদের লক্ষ্য। জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াই আমরা চালিয়ে যাবো।

বাংলা আউটলুক : বিগত সময়ে ছাত্রদল কতটুকু জনপ্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছে বা সফল হয়েছে?  

নাছির : পুরোপুরিভাবে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। আমরা যখন ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়েছি- সেই মঈনউদ্দীন, ফখরুদ্দীনের সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-কেন্দ্রিক যে আন্দোলন হয়েছে; ছাত্রসমাজের সেই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কারণেই মঈনউদ্দীন ফখরুদ্দীন ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। তারপর ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করার পর থেকে ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচন পর্যন্ত, এই সময়টাতে ছাত্রসমাজের যে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করার দরকার ছিল তা আমরা করতে পারিনি। ছাত্রদলের একজন কর্মী হিসেবে দায় আমারও রয়েছে।

বাংলা আউটলুক : সংকট কাটিয়ে ওঠার পথ কী?

নাছির : অতীতে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করেছে, ষাট-সত্তর দশকের স্বাধিকার ও স্বাধীনতার আন্দোলনে তারা মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে, নব্বইয়ে স্বৈরাচার এরশাদকে ক্ষমতার মসনদ থেকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়েছে বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ। এখন সময় এসেছে বাংলাদেশের সকল ছাত্র সংগঠন একত্রিত হয়ে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন দুর্বার আন্দোলনে শামিল হওয়ার। আমি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। একই সাথে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার আহ্বান থাকবে- ছাত্রদল দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলন সংগ্রামে রয়েছে, এদেশের মাটি-মানুষ রক্ষায়, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষায়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আপনারা আসুন, আমাদের সাথে শামিল হোন, আমাদের কাতারে একত্রিত হোন, এই দেশকে মুক্ত করুন, এদেশের গণতন্ত্রকে মুক্ত করুন, মানবাধিকার রক্ষার এই আন্দোলনে আপনিও অংশ নিন।

বাংলা আউটলুক : কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের একটি বড় অংশই রাজনীতি বিমুখ, সেখানে আপনার এই আহ্বান কতটুকু কাজে দেবে?    

নাছির : এই দায় কিন্তু ছাত্রদলের নয়। এ দায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের। তাদের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। গত ১৮ বছর ধরে তারা বাংলাদেশের ক্যম্পাসগুলোতে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে, যৌন নির্যাতন, ধর্ষণের মতো নারকীয় ঘটনা ঘটেছে। কিছুদিন আগেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কী ঘটেছে সকলেই জানেন। এর আগে একই ক্যম্পাসে ধর্ষণে সেঞ্চুরি করেছে তারা। সিলেটের এমসি কলেজে ধর্ষণ কাণ্ড ঘটিয়েছে, বুয়েটে আবরারকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবুবকর হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এমন হাজার হাজার ঘটনা আছে। সামগ্রিক এই চিত্রই বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিকে কলুষিত করেছে। এই কলুষিত রাজনীতির দায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের বয়স ১৮ থেকে ৩৫, গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে তারা ভোট দিতে পারেনি। সুতরাং এই তরুণরা শিক্ষার্থীরা, যারা ভোট দিতে পারছে না, তারা মনে করছে তারা দেশের জন্য অপরিহার্য না। তার মতামতের ভিত্তিতে দেশে সরকার পরিবর্তন হয়, দেশ পরিচালিত হয়- তারা এটা অনুধাবন করতে পারছে না। তারা মনে করছে তার মতামতের কোনো গুরুত্ব নেই, তার মতামতের বাইরে দেশ পরিচালিত হয়। সে জন্য তারা বিদেশমুখী হয়ে যাচ্ছে। দেশের সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারছে না। রাজনৈতিক উন্নয়নে তাদের কোনো ভূমিকাও আমরা দেখছি না। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে ছাত্রদের গুরুত্ব কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি আসলে একটি ষড়যন্ত্রের অংশ। ষড়যন্ত্র করেই আওয়ামী লীগ মানুষকে রাজনীতি বিমুখ করে বাকশালে ফিরে যেতে চায়, ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চায়। দেশকে ধ্বংস করে দিতে চায়।

বাংলা আউটলুক : এই তরুণদের প্রতি আহ্বান কী?      

নাছির : স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবার যেমন ভূমিকা রাখার দায়িত্ব আছে, তেমনি তরুনদেরও আছে। কিন্তু তাদের আরেও বাড়তি দায়িত্ব রয়েছে। তরুণদের কিন্তু প্রতিবাদ করার জায়গা রয়েছে। আমরা সে জায়গা থেকে দূরে সরে এসেছি। আমরা দেখেছি, আমাদের সীমান্তে ফেলানীকে মেরে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। সীমান্তে বিজিবি সদস্যকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী হত্যা করেছে। কিন্তু আমরা কোনো প্রতিবাদ করিনি। প্রতিবাদ করতে পারিনি। প্রতিবাদ না করার এই সংস্কৃতিই হচ্ছে তরুণদের রাজনীতি থেকে বিমুখ করার ফল। সুতরাং এই তরুণদের প্রতি আমাদের আহ্বান হচ্ছে, গত ১৬ বছর ধরে যে স্বাধীনতার জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, মানবাধিকার ফিরিয়ে আনার লড়াই হচ্ছে সে লড়াইয়ে শামিল হোন। আমাদের সীমান্তে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সাথে সাথে আমরা প্রতিবাদ করবো, দেশীয়ভাবে করবো, আন্তর্জাতিকভাবে করবো। বিচার চাইবো। তাদের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে আনবো। সাহস সঞ্চার করে তরুণদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা যে আন্দালনে রয়েছি, সেই আন্দোলনে আপনারাও আসুন। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলন করি। আমাদের এই আন্দোলন মানুষের জন্য, ভোটাধিকারের জন্য, স্বাধীনতা রক্ষার জন্য, সার্বভৌমত্বের জন্য। সর্বোপরি বাংলাদেশের মালিকানা বাংলাদেশের মানুষের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য আপনারা শরিক হন আমাদের সাথে।

বাংলা আউটলুক : ছাত্রদলে কোন বিশৃঙ্খলা আছে? নতুন পরিকল্পনা কী?

নাছির : গণতান্ত্রিক আন্দোলন করছে ছাত্রদল। ৫০ বছরের ছাত্র রাজনীতিতে বিপদজনক সময়ে কাজ করছি আমরা। এই খারাপ সময়ে ছাত্রদল যে কাজ করছে, তা অসাধারণ। এটা আমাদের জন্য আশাব্যঞ্জক। ছাত্রদলের ১১৮টি সাংগঠনিক ইউনিট রয়েছে। এর মধ্যে যেসকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা রয়েছে, বিভিন্ন মামলা, হামলা, গুম, খুন এবং সরকারের রোষানলের কারণে সাংগঠনিক তৎপরতা আমরা করতে পারিনি, সেগুলোকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে সাংগঠনিকভাবে কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরে জেলা বা অন্যান্য ইউনিট। এছাড়াও ক্যাম্পাস- ভিত্তিক নানা পরিকল্পনা নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি।

বাংলা আউটলুক : চলমান শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কি?

নাছির : ২০০৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪ এই সময়ে বাংলাদেশে যতগুলো পাবলিক পরীক্ষা হয়েছে, ৫ম শ্রেণী, ৮ম শ্রেণী, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা; সবগুলোতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। এমনকি, আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, ওই সময়ে প্রশ্ন ফাঁস করে পরীক্ষা দেয়নি এরকম পরীক্ষার্থী দেশে পাওয়া যাবে না। জেনেও কোনো প্রতিকার করা হয়নি। শিক্ষা নিয়ে একটি বৃহৎ দেশীয়-আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে। এই সরকার পূর্বপরিকল্পিত ভাবে শিক্ষাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। এটি হচ্ছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার অবস্থা। আর উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার কথা বলতে গেলে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগে যে দুর্নীতি হয়েছে তা ইতিহাসে বিরল। সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা একই রকম। শুধু আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত এই বিবেচনায় বিভাগে প্রয়োজনের তুলনায় দ্বিগুণ তিনগুণ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার ঘটনা ঘটছে অহরহ। যাদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে তাদের মেধা, যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন আছে। মানা হচ্ছে না কোনো নিয়ম নীতি। গত কিছু দিন ধরে শিক্ষানীতি নিয়ে কথা হচ্ছে। মন্ত্রী বলছেন, মাদ্রাসা বেড়ে যাওয়ায় স্কুলগুলো শিক্ষার্থী পাচ্ছে না। এসবগুলো কথাই হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থাকে সামগ্রিকভাবে ধ্বংস করার জন্য। আওয়ামী লীগের দীর্ঘ দিনের যে পরিকল্পনা আমরা সেটারই বাস্তবায়ন লক্ষ্য করছি। এটি যদি চলমান থাকে বিশ্বায়নের এই যুগে আমরা হারিয়ে যাব, আর এগিয়ে যেতে পারবো না। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে যে আমাদের কোনো শিক্ষার্থী বিদেশে ভাল কোনো ডিগ্রী নিতে পারবে না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সনদ বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যাচাই-বাছাইও করবে না।  

বাংলা আউটলুক : ছাত্রদল কী ধরনের আন্দোলন গড়ে তুলতে চায়?

নাছির : যে আন্দোলনে আমরা রয়েছি, সে আন্দোলনে বাধা দিচ্ছে। হাজার হাজার নেতাকর্মী নিয়ে মাঠে নামতে না পারার অন্যতম কারণ হচ্ছে, সরকাররের ফ্যাসিস্ট আচরণ। সরকারের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী দেখা মাত্রই আমাদের নেতাকর্মীদের গুলি করছে। অতীতে হয়তো আমাদের পরিকল্পনায় ভুল ছিল। সেগুলো আমরা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি। আমাদের নতুন কমিটি হয়েছে। আমাদের সাংগঠনিক অভিভাবক তারেক রহমান নির্দেশনা দিয়েছেন অতীতের ভুল-ভ্রান্তি ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলন সংগ্রামে অংশ গ্রহণ করার জন্য।

বাংলা আউটলুক : মাঠের আন্দোলনে কবে ফিরবে ছাত্রদল?

নাছির : অতি দ্রুতই আমরা মাঠে নামবো। ঢাকা শহরে যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমাদের ইউনিট রয়েছে সেখানে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। সেখানে সাংঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির জন্য আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। কিছু দিনের মধ্যে তা দৃশ্যবান হবে।

বাংলা আউটলুক : আংশিক কমিটি দেওয়া হয়েছে, কমিটি কত দিনে পূর্ণাঙ্গ হবে?

নাছির : স্বল্প সময়ের মধ্যেই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার নিদের্শনা রয়েছে। শহীদ রাষ্ট্রপ্রতি জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল নিবেদনের পরই কমিটি কাজে মনোনিবেশ করেছে। এছাড়া ১১৮টি জেলা কমিটি রয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। জেলার সাংগঠনিক কমিটিগুলো করবো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ শুরু হয়েছে।

বাংলা আউটলুক : ব্যর্থতার ইতিহাস ভুলে কীভাবে নতুন ইতিহাস গড়বে ছাত্রদল?

নাছির : ছাত্রদল কখনও ব্যর্থ হয়নি। ১৯৯০ সালে ব্যর্থ হয়নি। ২০০৬ সালের পরও যে আন্দোলন হয়েছে তাতে ছাত্রদল ব্যর্থ হয়নি। আন্দোলন চলমান রয়েছে। পৃথিবীর কোনো স্বৈরাচারকে দুই/চার/দশ দিন, এক/দুই বছরে ক্ষমতার মসনদ থেকে টেনে হেঁচড়ে নামানো যায়নি। আমাদের এ আন্দোলন আর বেশিদিন প্রলম্বিত হবে না। বিজয় অবধারিত। সরকারকে অবশ্যই চলে যেতে হবে।

বাংলা আউটলুক : আপনাকে ধন্যবাদ।

নাছির : বাংলা আউটলুককেও ধন্যবাদ। মুক্তির আন্দোলনে মানুষের অধিকারের কথা তুলে ধরতে গণমাধ্যম হিসেবে বাংলা আউটলুক হবে আস্থার ঠিকানা। এটাই প্রত্যাশা।



আওয়ামী লীগের বাইরে কোনো দলকে সরকার টিকতে দেবে না : জিএম কাদের পরবর্তী

আওয়ামী লীগের বাইরে কোনো দলকে সরকার টিকতে দেবে না : জিএম কাদের

কমেন্ট

এই সংক্রান্ত আরও খবর

6090 Dawson Blvd, Suite H, Norcross, GA, United States, Georgia [email protected]